Health

আদার উপকারিতা – স্বাস্থ্যগতভাবে আদা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা

আদার উপকারিতা

মশলা এবং ভেষজ ঔষধ গুণসম্পন্ন আদার উপকারিতা বেশ কার্যকারী। বহুল প্রচলিতভাবে আদা যদিও মশলা হিসেবেই বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আদা প্রাকৃতিক ভেষজ ঔষধের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আদাতে রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলো স্বাস্থ্য রক্ষার্থে এবং ভালো রাখতে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে। আমাদের শারীরিক কিছু সমস্যা আছে, যেগুলো দেখা দিলে ক্যামিকেল যুক্ত ঔষধ সেবন না করেই আদা খাওয়ার মাধ্যমেই সুস্থ্য হতে পারি। এছাড়াও মশলা হিসেবে সব মহাদেশেই আদার ব্যবহার লক্ষণীয়। আদা রান্নার স্বাদ বা টেস্ট দ্ধিগুণ করে ফেলে।

Table of Contents

আদা কী? আদা হলো মূলত এক ধরনের মশলা। কিন্তু মশলাগুণের পাশাপাশি এতে রয়েছে অনেক রকমের স্বাস্থ্য উপকারিতা। জ্বর-সর্দি হতে শুরু করে গলা ব্যথা এবং-কি এমন অনেক রোগের থেকে রেহাই পাওয়া যায় আদা খাওয়ার মাধ্যমে। মূলত শরীর সুস্থ্য রাখতে আদা হলো প্রাকৃতিক খনিজ সমৃদ্ধ একটি মশলা বা ভেষজ ঔষধ। ( ছোলার উপকারিতাজিরার বহুমুখী উপকারিতা সম্পর্কে জানুন )

আদার পুষ্টিগুণ

আদার পুষ্টিগুণ

ভেষজ বা প্রাকৃতিকগুণ সম্পন্ন ঔষধ হিসেবে আদা বেশ উপকারি। স্বাস্থ্য রক্ষার্থে আদাতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই এবং বি-কমপ্লেক্স। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান। খনিজ উপাদান হিসেবে রয়েছে ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, আয়রন, দস্তা, সোডিয়াম, সিলিকন, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক সহ আরো অনেক প্রকার খনিজ উপাদান।

উক্ত প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল, অ্যান্টি বায়োটিক উপাদান, অ্যান্টি সেপটিক, অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এজেন্ট ইত্যাদি জাতীয় উপাদান। এগুলোই হলো আদার পুষ্টিগুণ।

আদার উপকারিতা বা আদা খাওয়ার সুবিধা

আদার উপকারিতা বা আদা খাওয়ার সুবিধা

আদার পুষ্টিগুণগুলো জানার পর আদার উপকারিতাগুলো বুঝতে বেশ সহজ হবে। শারীরিকভাবে আদার মধ্যে রয়েছে মানব শরীরের অসংখ্য উপকারিতা। যেগুলো আদা খাওয়ার মাধ্যমে উক্ত উপকারিতাগুলো পেতে পারি। নিয়মিত আদা খাওয়ার মাধ্যমে এবং নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে, সঠিক পরিমাপে আদা খাওয়ার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যগত উপকারিতা। চলুন জানা যাক আদার উপকারিতাগুলো-

কাঁশি কমাতে আদা

কাঁশি দূর করতে অনেক আগ থেকেই আদা ব্যবহার হয়ে আসছে। আদাতে থাকে এক ধরনের বিশেষ উপাদান, যা গলা চুলকানো দূর করে এবং এতে আছে প্রাকৃতিক পেইন রিলাইভার, যা গলার ব্যথা সহ কাঁশি দূর করে। প্রতিদিন দিনে কয়েকবার আদার টুকরো মুখে দিয়ে রাখলে কাশি কমে আসে।

পেটফাঁপা ও আমাশয় নিরাময় করে

যাদের ক্ষেত্রে পেটে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক রয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে পেটফাঁপা সহ আমাশয় হয়ে থাকে, তাদের জন্য আদা বেশ উপকারক একটি উপাদান। আদা পেটে যাওয়ার পর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট পেটের মধ্যে থাকা পেশীগুলোকে শিথীল করে এবং ফলাফলসরূপ পেটফাঁপা কমে যায়। প্রতিদিন ১ চা চামচ আদার রসের সাথে মধু ও লেবু মিশিয়ে গরম পানিতে মিক্স করে খেয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে কয়েকবার খেয়ে ফেলুন। এতে আমাশয় সহ পেটের সকল ধরনের পীড়া দূর হয়ে যাবে।

হৃদরোগের সমস্যা দূর করে

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা নানা রকম রোগে ভুগছি। এর মধ্যে ধরুন কেউ একজন হৃদরোগের সমস্যা নিয়েও ভুগছে। এমতোবস্থায় সে ডাক্তারের পরামর্শে ক্যামিকেল জাতীয় ঔষধ সেবন করে অস্থায়ী ভাবে সুস্থ্য আছে। কিন্তু সে ‍যদি কিছু ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বণ করতো বা চেষ্টা করতো তাহলে সে অনেকাংশেই হৃদরোগের সমস্যা থেকে রেহাই পেয়ে যেতো। এক্ষেত্রে আদা কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন মধুর ও লেবুর রসের সাথে আদার রস মিক্স করে যদি কয়েকবার খাওয়া যায়, তাহলে হৃদরোগের মাত্রা অনেক বেশি কমে যায়। পাশাপাশি যারা গ্যাস্ট্রিক এবং আমাশয় বা পেট ব্যথায় ভুগছেন, তারা এই পদ্ধতি অবলম্বণ করে কিছুটা হলেও রক্ষা পেতে পারে।

মাইগ্রেন এবং সাইনাসের সারায়

মাইগ্রেন এবং সাইনাসের ব্যথা কমাতে আদা বেশ কার্যকারী। ব্যথা যদি বেশি হয়ে থাকে এবং তাৎক্ষণিক ব্যথা কমাতে হবে এরকম পরিস্থিতি হলে সাথে সাথেই লবণ দিয়ে আদা খেতে হবে। তবে স্থায়ীভাবে এসব রোগ সারাতে হলে প্রতিদিন কয়েকবার করে ১০-১৫দিনের উপর আদা খেতে হবে। গরম একগ্লাস পানির সাথে মধু ও লেবুর রস মিশেয়ে আদা খেতে হবে। সপ্তাহে কয়েকবার এভাবে আদা খেলে মাইগ্রেন বা সাইনাসের প্রদাহ কমে যায়।

গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা দূর করে

আদা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্বের চেয়ে অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অনেক বিজ্ঞানী দাবী করেন  যে, নিয়মিত গরম পানির মাধ্যমে আদা খেলে তার গলা ব্যথা স্বাভাবিক একটা মানুষের চেয়ে অনেকগুণ কম থাকে। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে গলা ব্যথা কমাতে আমাদের বেশি করে আদা খেতে হবে।

কফ দূর করে

আদাতে আছে প্রাকৃতিক ভেষজ সম্পন্ন গুণ। যাদের একটানা কয়েকদিন কাঁশি থাকে, তাদের ক্ষেত্রে কয়েকদিন পর গলায় এবং বুকে কফ জমা হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানির সাথে আদার রস এবং তুলসি পাতার রস এক সাথে খেলে আশা করা যায়  গলা ও বুক থেকে কফ সরে যাবে। এছাড়া সাথে কাঁশি ভাবটা চলে যাবে। বুকের ভিতর জমে থাকা কফ এবং গলাতে জমে থাকা কফ দূর করতে এই পদ্ধতিটা চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আদা

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বা হ্রাস করতে আদা বেশ কার্যকারী একটি উপাদান। যাদের দেহে প্রচুর ব্লাডপ্রেসার থাকে, তারা প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে দুবলা করে আদা, লেবুর রস এবং মধু একসাথে করে খেলে উচ্চ রক্ত চাপ সহ আরো অনেক রোগ থেকে রেহাই পাবে। এই ক্ষেত্রে যেসব রোগীরা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে মধুটা বাদ দেওয়া যেতে পারে। প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থায় আদার স্থান ছিল সর্বোচ্চ। কেননা আদা একাধিক রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার হতো। কাশি দূর করতেও এই পদ্ধতিটা অবলম্বন করা যেতে পারে। মূলত আদা একাধিক রোগের ঔষধ, তাই ঘুরেফিরে খাওয়া এবং ঔষধ বানানোর কৌশলে একই ভাব চলে আসে। আদা কিডনির জন্যও বেশ উপকারি।

হাঁড়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর করে

অসটিও আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ফলে আমাদের শরীরের সবগুলো জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা তৈরি করে। এসব ব্যথা দূর করতে আদা বেশ কার্যকারী এবং ফলফস্রু। তবে এই ক্ষেত্রে অনেকে রান্না করে আদা খেয়ে ফেলে। যা মোটেও ঠিক নয়। রান্না করা আদার চেয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে বা পিষিয়ে খাওয়া বেশ কার্যকারী। কাচা আদাতে পুষ্টিগুণও বেশি থাকে। মূলত শরীরে প্রবেশের পর আদা টনিকের মতো কাজ করে। যা কয়েকদিন এভাবে খাওয়ার পর সম্পূর্ণভাবে প্রত্যেকটা জয়েন্টের ব্যথা দূর হয়ে যায়।

ফুসফুসের জন্য আদা

বেশি কাশি এবং সর্দি-জ্বর ফুসফুসের জন্য বেশ ক্ষতিকর। অত্যধিক কাশি হতে ফুসফুস ছিড়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আদা খাওয়ার  মাধ্যমে কাশি দূর করা যায়। এছাড়া অন্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্ধারা আক্রমণের হার অনেকাংশে কমে যায় আদার কারণে। কেননা আদাতে আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন গুণ এবং রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ। ফুসফুস রক্ষাথে কিছু ব্যায়াম ও করা যেতে পারে। এগুলো আমাদের আমাদের ফুসফুসের জন্য বেশ কার্যকারী ব্যায়াম। নিয়মিত আদার রস এবং লেবুর রস একসাথে করে খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার স্তর তৈরি হয়। তাই আদা ও লেবুর রস গরম পানির সাথে করে খেতে হবে।

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

আদাতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো বৃদ্ধি করে। নিয়মিত লেবুর রস এবং মধু দিয়ে আদা খেলে পূর্বের চেয়ে আরো অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন সকালে এবং দিনে ১ বা ২বার করে খেতে হবে। একগ্লাস কুম-কুম পানির সাথে লেবুর রস এবং মধু মিক্স করে আদার রস মিশাতে হবে। এরপর খেয়ে ফেলতে হবে।  এভাবে কয়েকদিন খাওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। বর্তমান দূষিত এই পরিবেশে বসবাস করার জন্য এবং আমাদের শরীরের অর্গানগুলো সুস্থ্য রাখার জন্য দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মতো বিকল্প আর কোনো কিছুই নেই। তাই নিয়মিত উক্ত উপায়ে আদা খেতে হবে। তাহলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

বমি ভাব দূর করে

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের বিশেষ করে গাড়িতে চড়ার সময় বমি বমি ভাব চলে আসে। এছাড়াও মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই কারো ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব আসে। সেক্ষেত্রে যদি এক টুকরো আদা মুখে দিয়ে রাখা যায়, তাহলে বমি বমি ভাব দূর হয়ে যায় এবং মুখে স্বাদ স্বাদ একটা ভাব চলে আসে। কাচা আদা মুখে দিয়ে রাখলে কারো ক্ষেত্রে রুচির উন্নতি ঘটে। তাই মাঝে মাঝে কাচা এক টুকরো আদা খাওয়া যেতে পারে।

শ্বাসকষ্ট দূর করতে আদা

শ্বাসকষ্ট দূর করতে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়ার উন্নতির জন্য আদা বেশ কার্যকর। আদা খাওয়ার মাধ্যমে হাঁপানি রোগীরা বেশ উপকার পেতে পারে। কারো যদি ফুসফুসের ধমনিতে কোনো রকম সংক্রমণ হয়ে থাকে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব হয় , তাহলে সে প্রতিদেন দুইবার করে আদা খেলে এর থেকে রেহাই পেতে পারে। আদাতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল জাতীয় পদার্থ। যা যে কোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে থাকে।

ক্যান্সার রোধ করে

আদা এবং মধু একত্রে খেলে শরীরে বেশ ভালো একটি প্রভাব পড়ে। কেননা এই দুইটির মিশ্রণে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের দেহে থাকা বিশাক্ত পদার্থগুলো বের করে দেয়। বিশেষ করে আমাদের দেহে থাকা টক্সিন পদার্থগুলো। আদা ও মধুর উপকারিতা পাওয়া সম্ভব এ মিশ্রণে। এভাবে প্রতিদিন কয়েকবেলা করে খেলে শরীরের ক্ষতিকর ক্যান্সার সেলগুলো ধ্বংস করে দেয় আদা। আমাদের শরীরে অবস্থিত ওভারিয়ান ক্যান্সার সেলগুলো ধ্বংস করতে আদা বিশেষ উপকারি। তাই ক্ষতিকর ক্যান্সার সেল রোধ করতে প্রতিদিনের রুটিনে কিছুটা আদা রাখা উচিত।

হজমে সহায়তা করে

আমাদের অনেকের পেটে থাকে নানা রকম পীড়া। এসবের কারণে হজমে মাঝে মাঝে গন্ডগোল হয়। এমতোবস্থায় হজম স্বাভাবিক করার জন্য আদা ও মধুর মিশ্রণ বেশ উপকারি। প্রতিদিন এক গ্লাস কুম-কুম পানির সাথে মধু ও আদার রস মিশিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। এতে হজমে বেশ উপকার পাওয়া যাবে।

বাতের চিকিৎসা হিসেবে আদা

প্রাচীনকাল হতে বাতের চিকিৎসা হিসেবে আদা ব্যবহার হয়ে আসছে। বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের অভাবে বাত রোগ হয়ে তাকে। আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং আয়রণ। ক্যালসিয়াম আমাদের দেহের হাঁড় গঠনে সহায়তা করে থাকে। হাঁড় মজবুত রাখতে ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই নিয়মিত আদা খাওয়ার মাধ্যমে বাতের রোগীরা  উপকার ‍পেতে পারে।

উপরোক্ত আদার এসব উপকারিতার পাশাপাশি আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য আদার এসব উপকারিতার জন্য প্রাচীনকালে হতেই আদা আয়ুর্বীদ চিকিৎসকরা ব্যবহার করে আসছে।

শুকনো আদার উপকারিতা

শুকনো আদার উপকারিতা

আদার উপকারিতা এমনিতেই অনেক। এর মধ্যে কেউ যদি শুকনো আদা সংগ্রহ করতে পারে তাহলে সে অতিরিক্ত কিছু উপকারিতা পেতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করা শুকনো আদার আমাদের শরীরেকে শীতল করতে বেশ উপকারি এবং হৃদরোগীদের জন্য ভালো ফলদায়ক। এছাড়াও শুকনো  আদা খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীরা, আমাশয়ের রোগীরা। যারা পেটের পীড়ায় ভুগছেন, তারাও শুকনো আদার থেকে উপকৃত হতে পারেন। বুকের ভিতর আটকে থাকা দীর্ঘদিনের কফ দূর করতে শুকনো আদা বেশ উপকারি। মূলত এগুলোই হলো শুকনো আদার উপকারিতা।

আদা রসের উপকারিতা

আদা রসের উপকারিতা

আদার রসের উপকারিতার দিক লিখে শেষ করা যাবে না। শুকনো আদার চেয়েও অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে আদার রসে। নিয়মিত আদার রস খাওয়ার মাধ্যমে যেসব উপকারিতা পেতে পারি এগলো হলো-

  • সর্দি-কাঁশি দূর হয়ে যাবে
  • হজম ঠিক মতো হবে
  • শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক মতো হবে
  • একটু মধু মিশিয়ে খেলে কাঁশ ভালো হয়ে যায়
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়

মূলত এগুলো ছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে আদার রসের । যেগুলো নিয়মিত আদার রস খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পাওয়া সম্ভব।

আদা চা এর উপকারিতা

আদা চা এর উপকারিতা

জ্বর শেষে খুসখুস কাঁশিতে আদার চা বেশ উপকারক একটি চা। এছাড়াও আরো অনেক উপকার রয়েছে আদার চা-য়ে। চলুন সংক্ষেপে জানা যাক আদা চা এর উপকারিতাগুলো-

  • খুসখুসে কাঁশ দূর হয়
  • রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
  • আদার চা-য়ে আছে ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি উপকারি উপাদান
  • হার্টের থেকে চর্বি অপসারণ করতে সহায়তা করে

এগুলো ‍ছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে আদার চায়ের। তবে নিয়ম অনুযায়ী চা তৈরি করলে আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।

খালি পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতাগুলো হলো দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও খালি পেটে আদার খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, মিনারেল এবং ভিটামিন ইত্যাদি। উক্ত উপাদানগুলো আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই উপাদানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এসব উপকার পেতে নিয়মিত খালি পেটে আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং ধারাবাহিকভাবে এটা চালিয়ে যেতে হবে।

আদা ও মধুর উপকারিতা

আদা ও মধুর উপকারিতা

আদা ও মধুর উপকারিতা না বললেই নয়। আদাতে থাকা ‍উপকারি উপাদানগুলো যখন মধুর সংস্পর্শে আসে তখন এর কার্যক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। আদা ও মধুর যৌথ উপকারিতাগুলো হলো-

  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে
  • আয়রনের ঘাটতি দূর করে
  • হজমে সহায়তা করে
  • বমি বমি ভাব দূর করতে সহায়তা করে
  • হৃদরোগের আশঙ্কা কমিয়ে ফেলে

উপরোক্ত এসব উপকারিতার পাশাপাশি রয়েছে আরো উপকারিতা। সংক্ষেপে এগুলোকেই হাইলাইট করা হয়েছে।

আদার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক

আদার অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিক

যদিও আদার তেমন ক্ষতিকর কোনো অপকারিতা নেই । তবে অত্যধিক আদা খাওয়ার ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে আদার রয়েছে কিছু সাইড ইফেক্ট্য। এগুলো হলো

  • ওজন হ্রাস পাওয়া
  • অন্তঃসত্ত্বাদের কিছু সমস্যা ফেস করা ইত্যাদি

উপরোক্ত এই দুইটি আদার উপকারিতা ব্যাতিত আর অন্য কোনো অপকারিতা খুজে পাই নি।

আদা মশলা এবং স্বাস্থ্যগত উভয় ভাবেই আমাদের জন্য বেশ উপকারক। তাই নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে।

আদার উপকারিতা সম্পর্কে আরো জনতে দেখুন

Sadia Afroz Niloy

Hey! I am Sadia Afroz Niloy! A student and passionate writer. I love to write blog and connect people Realtime. Send business proposal at [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button