১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ বক্তব্য,ভাষন,বক্তৃতা |১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তব্য
[ad_1]
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন/ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বক্তব্য/ভাষন
১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস →বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, শিক্ষক- শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও উপস্থিত সম্মানিত সুধী, আসসালামু আলাইকুম।
১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।
তাঁর সাহসী ও আপসহীন নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়েই পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালি জাতি।
‘সে তো ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী, অন্যায় সহ্য করতো না। কোথাও তা দেখলে প্রতিবাদ করতো।’
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানসিকতা, গরিব- দুঃখী মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের দুঃখ দূর করার প্রতিজ্ঞা পরবর্তীতে তাঁকে রাজনীতিতে নিয়ে আসে।
১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।
১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৪১ সালে অসুস্থ শরীর নিয়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় আংশগ্রহণ করেন।
রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর পিতা তাঁকে বাধা দেননি।
বলেছিলেন, “বাবা, রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এত সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলো না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না। আর একটা কথা মনে রেখ, Sincerity of purpose and honesty of purpose থাকলে জীবনে পরাজিত হবে না।”
ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই মুজিব কলকাতায় যান ৷
কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো শুরু হয় ৷
তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় হন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে শেখ মুজিবও ঢাকায় চলে আসেন।
নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন।
১৯৪৯ সালে নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবী নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার ত্বরান্বিত হয় ৷
১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন,
১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন,
১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও
১৯৬৬ এর ঐতিহাসিক ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।
১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতা তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে অকুন্ঠ সমর্থন জানায়।
কিন্তু পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তার ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন।
২৫ শে মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ প্রায় নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করে।
তাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের।
স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এই মহান নেতার জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
কোনো বিশেষ ঘটনা বা আনন্দের দিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়৷
বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন।
এজন্য ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত আদর করতেন, ভালোবাসতেন। শিশুদের সাথে গল্প করতেন, খেলা করতেন।
তিনি বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামীদিনে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিবে। তরুণ প্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকেই দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করে৷
বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে আমরা জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব, সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐতিহাসিক ভাষণ সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল।
যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ।
আজকের দিবসটি মূলত বঙ্গবন্ধুর শিশুকালকে স্মরণের উদ্দেশ্যে উদযাপিত হলেও এ দিবসের সাথে জড়িয়ে আছে এদেশের প্রত্যেকটি শিশুর হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ ।
শিশুদের সম্পর্কে সুকান্ত ভট্টাচার্য তার ‘আগামী’ শিরোনামের কবিতায় যথার্থই বলেছেন,
‘জড় নই, মৃত নই, নই অন্ধকারের খনিজ/
আমি তো জীবন্ত প্রাণ, আমি এক অঙ্কুরিত বীজ।’
শিশু দিবসে জাতিসংঘের চাওয়া হলো- শিশুকে শিশুর সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দেয়া৷
এতে করে শিশুরা নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান করবে জাতিতে, গোষ্ঠীতে।
নিজেরা নিজেদের উৎসাহ দেবে, নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করবে৷
জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার ১৫ বৎসর পূর্বে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অধিকার সুরক্ষার জন্য শিশু আইন প্রনয়ণ করেন।
সদ্য স্বাধীন দেশে শিশুর শিক্ষা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে কল্যাণকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
আমাদের প্রতেককেই শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শিশু বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে আরও অনেক বেশি আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান হতে হবে ৷
পরিশেষে, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ একটি কবিতার কয়েকটি লাইন উচ্চারণ করছি-
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্ৰাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তব্য/ভাষন pdf
Tag:১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস বক্তব্য,১৭ ই মার্চের বক্তব্য ২০২৩ [বক্তৃতা,ভাষন PDF], ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন/ জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বক্তব্য/ভাষন