
আওয়াবীন নামাজের নিয়ম অনেকেই জানতে চায় যে, কিভাবে আওয়াবীন নামাজ বা সালাত আদায় করতে হয়। এই নামাজ পড়ার নিয়ম কি? কোন সময় আওয়াবীন নামাজ পড়তে হয়, কত রাকাত, এর ফজিলত কি কিংবা কোন কোন সূরার মাধ্যমে আওয়াবীন নামাজ পড়তে হয়? এই সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পূর্বে সর্বপ্রথম আমাদেরকে জানতে হবে আওয়াবীন নামাজ কাকে বলে? হ্যাঁ, অবশ্যই আমাদেরকে এই বিষয়টিকে ক্লিয়ার করতে হবে সর্বপ্রথম।
আওয়াবীন নামাজ কাকে বলে?
তাহলে আমরা জেনে গেলাম যে আওয়াবীন নামাজ কাকে বলে! এবার ক্রমান্বয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আওয়াবীন নামাজ সম্পর্কিত সকল ধরনের জিজ্ঞাসার উত্তর জানবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। ( সুন্নত নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম )
আওয়াবীন নামাজ

ইতিমধ্যে আমরা আওয়াবীন নামাজ সম্পর্কে জেনেছি। এখণ আমরা জানবো আওয়াবীন নামাজ কিভাবে পড়তে হয়। শুরুতে বলে রাখি যে, অন্য সকল নামাজের ন্যায় আওয়াবীন নামাজেও একজন মুসলিমের উচিত পরিপূর্ণভাবে সর্বপ্রথম পবিত্র হতে হবে অজু দ্ধারা। তবে এইক্ষেত্রে অধিকাংশই পবিত্র থাকে। কেননা আওয়াবীন নামাজের পূর্বে আমরা মাগরিবের সালাত আদায় করেছি। যাইহোক, তাহলে কিভাবে আওয়াবীন নামাজ পড়তে হয়? ( ইসলামিক আমল সমূহ জানুন )
আওয়াবীন নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম
আওয়াবীন নামাজের নিয়ত
বাংলা নিয়ত: “আমি দুই রাকাআত আওয়াবীনের নামাজ আদায় করছি।’
নোট: এখানে একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে, যেহেতু সকল কিছুই নিয়তের উপর নির্ভরশীল, সেহেতু আওয়াবীন নামাজ পড়ার সময়ও আমাদের কে নিয়ত বাঁধতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে উচ্চস্বরে কিংবা মুখে বলা জরুরি নয়। বরং আপনি মনে মনে বললেও হয়ে যাবে। আরবি অথবা বাংলা যেকোনো উপায়ে বললে আপনার নিয়ত হয়ে যাবে।
আওয়াবীন নামাজ পড়ার নিয়ম
যেহেতু আওয়াবীন নামাজ পড়ার সময় হচ্ছে মাগরিবের পর হতে এশার আগ পর্যন্ত, তাই ঐটুকু সময়তে যত রাকাত সম্ভব আওয়াবীন নামাজ পড়া যায়। তবে অবশ্যই তা বিশ রাকাতের উপর যেতে পাড়বে না। তাই এই ক্ষেত্রে আপনি দুই রাকাত করে আয়ওয়াবীনের নামাজ পড়তে পারেন। প্রথমে নিয়ত পড়ে আপনি যেকোনো একটি সূরা দ্ধারা আওয়াবীন নামাজ পড়তে পারেন। উভয় রাকাতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য যেকোনো সূরা মিলিয়ে নামাজ পড়তে পারেন। এবং আখেরী বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে। আর এভাবেই আপনি আওয়াবীন নামাজ পড়তে হবে।
আওয়াবীন নামাজ পড়ার ফযিলত সমূহ
আওয়াবীনের নামাজহযরত আবু হুরায়রা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়বে, এসবের মাঝাখানে কথাবার্তা বলবে না, আল্লাহ্ তা’আলা তার ১২ বছরের নফল ইবাদাত করার ছাওয়াব দান করবেন। (১) তিরমিযী শরীফ ১ম খ- ৯৮ পৃৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ ১ম খ- ১০৪ পৃষ্ঠা।
হযরত আম্মার বিন ইয়াসীন (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরীবের পর ছয় রাকাত আওয়াবীনের নামাজ পড়বে, তার গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তার গোনাহ সাগরের ফেনাতুল্য হয়। ইবনে মাজাহ, ১ম খ-, ৮১ পৃষ্ঠা।
হযরত আয়েশা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরীবের পর বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর প্রতিষ্ঠিত করবেন অর্থাৎ সে বেহেশতে যাবে। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ৯৮ পৃৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১০৪ পৃষ্ঠা।
এই নামাজের সময় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নাত নামাজের পর কমপক্ষে ৬ রাকাত এবং ঊর্ধ্বে ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়, ইহাকে সালাতুল আওয়াবীন বলে।
সুতরাং উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে ধারণা করা যায় যে, সালাতুল আওয়াবীন নামাজের ফজিলত কতটুকু। একজন মুসলিমের উচিত, কোনো রকম ব্যস্ততা না থাকলে নিয়মিত কিংবা সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও আওয়াবীন নামাজ আদায় করা।
আওয়াবীন নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

যেহেতু আওয়াবীন নামাজের অনেক সাওয়াব এবং ফজিলত, তাই আমাদের প্রতিটি মুমিন মুসলিমের উচিত, যতটুকু সম্ভব, সময় বের করে মাগরিবের পর আওয়াবীন সালাত আদায় করা। আর কিভাবে আওয়াবীন নামাজ আদায় করতে হয়, ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। মহান আল্লাহ তা’আলাকে খুশি করতে বেশি বেশি সালাত আদায় করার মাধ্যমে দোয়া চাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই বেশি বেশি নফল ইবাদত সহ নামাজ পড়তে হবে আমাদেরকে। সেই প্রেক্ষিতে আওয়াবীন নামাজও আমরা পড়তে পারি।
আওয়াবীন নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আরো জানতে
Table of Contents