Technology

মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের কি ক্ষতি হচ্ছে এবং চোখের যত্ন নেওয়ার উপায়

কম্পিউটার ও মোবাইল থেকে চোখের যত্ন নেওয়ার উপায়

মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারে আপনার বা আমার চোখের কেমন ক্ষতি হচ্ছে, তা কি দু’বার ভেবে দেখেছেন? এই ক্ষতি থেকে রেহাই পেতে চোখের যত্নে কি করবেন বা কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে কি কখনো চিন্তা করেছেন? এসব প্রশ্নে উত্তর যদি হয় ”না”, তাহলে আপনি চরম চক্ষু সংকটে পড়তে যাচ্ছেন। কিভাবে এবং কেন এরকম হচ্ছে পাশাপাশি এর থেকে উত্তরণ পাওয়ার উপায় নিয়েই আজকের এই আর্টিকেলটি। ( সকল সিমের প্রয়োজনীয় সকল কোড নাম্বার গুলো জানুন এবং রকেট অফার সম্পর্কে জানুন )

বৈজ্ঞানিক এই অগ্রযাত্রাময় যুগে এসে আমাদের হোঁচট খেতে হয় শারীরিক নানা রকম সম্যাসা জনিত কারণে! এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সমস্যা হলো চোখের প্রবলেম! আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, যাদের কাজের ক্ষেত্রটিই হলো কম্পিউটার বেজড। তাদের ক্ষেত্রে তাঁরা কিভাবে তাদের চোখের যত্ন নিবে? কিভাবে অতি ব্লু লাইটের আলোকে পাশ কাটিয়ে চোখকে শান্ত রাখবে? আমরা যখন কম্পিউটার কিংবা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি, তখন সে ডিভাইসগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে আলোকরশ্মি তথা ব্লু লাইট নির্গত হয়। আর সেই রশ্মি আমাদের চোঝে সরাসরি এসে পড়ে। এত কি হয়? ধারুণ প্রশ্ন! তবে উত্তর জানলে আপনি অবাক হবেন এবং অনেকে মর্মাহত হবে!

বিজ্ঞানিরা টিভির মনিটর, এলইডি, স্ক্রিন, কম্পিউটার স্ক্রিণ বা মনিটরের উপর বিস্তর গবেষণা চালান। আর উক্ত গবেষণায় মারাত্মক সকল ধরণের তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ চক্ষুরোগ-চিকিত্সক অ্যান্ডি হেপওর্থ জানান, “যখন কেউ মোবাইল ফোন ইউজ করে, তখন মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় চোখের পলক কম পড়ে এবং তুলনামূলকভাবে অস্বাভাবিকভাবে, স্বাভাবিকের তুলনায় স্মার্টফোন চোখের বেশি কাছাকাছি এনে কোনো বিষয় দেখা হয়৷ আর তাই, দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি দেখার বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বলেন চক্ষুরোগ-বিশেষজ্ঞরা৷ বিজ্ঞানীদের দাবি হলো যে যন্ত্রগুলো থেকে আলো নির্গত হয় তা চোখের জন্য শুধু ক্ষতিকরই নয়, বিষাক্তও বটে৷ এতে করে আমাদের শুরু হয় ঘাড়ে ব্যথা, মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনও হতে পারে৷ তবে শুধু মাত্র যে চোখের ক্ষতিই হয়, তাই কিন্তু নয়, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের শুক্রাণুর সংখ্যাও কমিয়ে দিতে পারে৷ পৃথিবীর অধিকাংশ পুরুষই মোবাইল ফোন তাঁদের প্যান্টের পকেটে রাখেন৷ আর এই সময় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন পুরুষের প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি করতে সাধন করে তীব্রভাবে৷ তাহলে বলাই বাহুল্য, এ ধরনের ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়৷” বিশেষজ্ঞদের অভি-ব্যক্তির উপর বলা যেতে পারে যে,মোবাইল ফোনের ভয়াবহতা যে শুধু আমাদের দু’চোখেই সীমাবদ্ধ, তাই নয়, বরং শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ অর্গাণে এর প্রভাব বিস্তার করে। ( ফেজবুক পেজ ভেরিফাই করার নিয়ম জানুন )

আমাদের তরুণ সমাজে মোবাইল ফোন ছাড়া এক মূহর্ত যেন কল্পনা করাও অসম্ভব। মোবাইল ফোন ব্যবহারের আসক্তির থাবা আমাদের কুড়ে কুড়ে নষ্ট করে দিচ্ছে। তারমধ্যে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে নানা ধরনের গেমস Lots of expensive and popular game তাদেরকে আরো আসক্ত করছে। তারমধ্যে কয়েকটি হলো ফ্রী-ফায়ার( Free Fair Game ), পাবজি ( Pubg Game ), স্টার ওয়ার গেইম( Star War game ), কল অব ডিউটি( Call of Duty popular game ), গ্রেন্ড থিপট অটো বি ( Grand Theft Auto V game ) এসব গেইমসে তাঁরা প্রতিনিয়ত বেশ আসক্ত হচ্ছে। একই সময়ে তাঁরা স্পর্শকাতর সাইটগুলোতে ভিজিটের পাশাপাশি নানা রকম গ্লাম্বার ও অনৈতিক কর্মকান্ড করে থাকে ইন্টারনেটে। আর এসব তাদেরকে শারীরিক ভাবে যেমন দূর্বল করে তোলে ঠিক একইভাবে মানসিকভাবেও তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়।

মোবাইল ও কম্পিউার ব্যবহারের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো

তাহলে এখন যদি আমরা একটি ছোট সামারি তৈরি করি যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে চোখের সহ  কি কি ক্ষতি সাধন হচ্ছে আমাদের, তাহলেই বোঝতে আরো সুবিধা হবে। মোবাইল ফোন দ্ধারা যেভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি-

  • মাত্রারিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে আমাদের শরীরের মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন হ্রাস পায়।
  • অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়।
  • স্ক্রিণের নীল আলো বা রশ্নি আমাদের চোখের কোষের মধ্যে ক্ষয় সৃষ্টি করে।
  • চোখে ব্যথা অনুভব হয়।
  • প্রোপার ঘুমানোতে ব্যঘাত ঘটে।
  • রেটিনার স্থায়ী ক্ষয় ও ক্ষতি করে অন্ধত্বতের দিকে ঝুঁকে দিতে পারে।
  • স্মৃতি শক্তি হ্রাস পেতে পারে।
  • চিন্তা শক্তি হ্রাস করে।

উপরোক্ত ক্ষতিগুলো ছাড়াও আরো প্রায় শ’খানেক ক্ষতি রয়েছে, যা একজন মোবাইল ফোন ইউজার বা কম্পিউটার ব্যবহারকারী এগুলো দ্ধারা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে এখন সামনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কিভাবে আমরা এখন উক্ত সমস্যাগুলো থেকে রেহাই বা মুক্তি পেতে পারি? হ্যাঁ, অবশ্যই উপায় রয়েছে, তবে যেসব উপায়গুলো রয়েছে সেগুলোর কোনটিই স্থায়ী বা পারপেক্ট উপায় নয়। এর জন্য সর্বোচ্চ উপায় হলো নিজেকে সচেতন করা এবং এর ক্ষতিকারক দিকগুলো সম্পর্কে আরো সচেতন হওয়া। তাহলে চলুন, সংক্ষিপ্তে জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে আমরা উক্ত মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করে সৃষ্টি সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারি।

মোবাইল ফোন ব্যবহারে বা কম্পিউটার ব্যবহারে যে ক্ষতিগুলো হয়, তা থেকে কিভাবে পরিত্রাণ পেতে পারি, তা জানার আগে চলুন জানা যাক নীল আলো (Blue Light) কি, তা জানা যাক।c

নীল আলো বা Blue Light হলো মূলত মোবাইল বা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর আলোকরশ্মি। যা আমাদের সরাসরি মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিণ থেকে নির্গত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে এবং ক্রমান্বয়ে চোখের কোষগুলোর ক্ষতি সাধন করে চোখের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে। মূলত মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিণ বা ডিসপ্লে হতে বের হওয়া নীল আলোকেই ব্লু লাইট বলে। আর এটিই আমাদের শরীরের বিশেষ করে চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাহলে যেহেতু এখন আমরা জানি যে, আমাদের চোখের ক্ষতির জন্য কারণটা কি, এবং কেন হয় এরকম। এবার চলুন জানা যাক কিভাবে চোখের যত্ন নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে জানা যাক।

চোখের যত্ন নেওয়ার উপায় – Way to take care of eyes

রশ্নি থেকে চোখের যত্ন নেওয়ার উপায়

এতোক্ষণ ধরে আমরা ব্রড ওয়েতে জানলাম যে, মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিণ থেকে বের হওয়া ব্লু লাইট বা নীল আলো দ্ধারা কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। এখন জানার সময় হয়েছে, কিভাবে উক্ত ক্ষতিগুলো এড়াতে পারি অথবা এর থেকে রেহাই বা মুক্তি পেতে পারি। তাহলে চলুন, সে সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান নেওয়া যাক।

নীল আলো প্রোটেক্টর গ্লাস – Blue Lilght Protector Glass ব্যবহার করা

টিভি, মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিণ থেকে বের হওয়া নীল আলো যাতে আমাদের চোখে সরাসরি এসে না পড়ে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই নীল আলো প্রোটেক্টর গ্লাস ব্যবহার করতে হবে। এটি এখন প্রায় সবার নিকটে পরিচিত। অর্থাৎ এই গ্লাসের ব্যবহার ও নাম সব কিছুই প্রায় সকল মোবাইল বা কম্পিউটার ইউজারের নিকট পরিচিত। তাই যদি কেউ অনেকক্ষণ যাবত কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যবহার করে থাকে, তাহলে সে যদি এই নীল আলো প্রোটেক্টর গ্লাস ব্যবহার করে, তাহলে সে অনেক রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। তাই সকলের উচিত, বিশেষ করে অত্যাধিক মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারীদের উচিত, নীল আলো প্রোটেক্টের গ্লাস ব্যবহার করা। এটি প্রায় সকল গ্লাস শপগুলোত পাওয়া যায়। শুধু বললেই হয়। আর দামও তেমন চড়া নয়। ৩০০-৬০০ টাকার মাঝেই পেয়ে যাবেন।

নিরাপদ দূরত্বে কম্পিউটার বা মোবাইল রাখা

আমাদের অনেকের মাঝে একটি বদ-অভ্যাস আছে যে, যখন আমরা মোবাইল বা পিসি ব্যবহার করি, তখন খুব কাছে এগুলোকে সেট করি। আর এটি যে কি পরিমাণ ক্ষতি সাধন করে, তা আমাদের ধারণারও বাহিরে। তাই যদি আপনি দীর্ঘক্ষণ পিসি বা মোবাইল অথবা টিভির সামনে বসে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্বনিম্নে ৩ ফুট দূরে এগুলোকে সেট করতে হবে। অর্থাৎ আপনার চোখ থেকে এই ডিভাইসগুলো যাকে নিম্নে ৩ফুট দূরে থাকে। এতে কিছুটা হলেও নীল রশ্নি হতে মুক্তি পাবেন।

নীল রশ্মি প্রোটেক্টর হিসেবে অ্যাপস ব্যবহার করা

যেহেতু আমরা অত্যাধিক মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করি, সেহেতু আমাদের চোখকে রক্ষা করতে এক প্রকারের বিশেষ অ্যাপস ব্যবহার করতে হবে। যেগুলো স্ক্রিন থেকে নীল আলো নির্গত হওয়া কিছুটা হলেও কমিয়ে ফেলে। এটি উইন্ডোজ ও মোবাইল ভেদে ভিন্ন হয়। যেমন-

এই দুই সফটওয়্যারটি আপনারা আপনাদের ডিভাইসে ইনস্টল করে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনাদের ডিভাইসের ডিসপ্লে হতে তুলনামূলকভাবে অনেক পরিমাণ নীল আলো কম আসবে। অর্থাৎ উক্ত সফটওয়্যার দুটি দ্ধারাও আপনারা আপনাদের মূল্যবান চোখ দুটিকে কিছুটা হলেও ক্ষতি হতে রেহাই দিতে পারেন। তবে শুধু মাত্র এই দুটি সফটওয়্যার বা অ্যাপস এর ডিপেন্ড করে থাকলেই চলবে না। পাশাপাশি আপনাদেরকে অবশ্যই অন্য উপায়গুলোকেও মান্য করতে হবে।

মূলত এই ছিল আমাদের আজকের মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের কি ক্ষতি হচ্ছে এবং চোখের যত্নে কি করবেন। উপরোক্ত বিস্তর আলোচনা থেকে আমরা অবশ্যই এইটুকু ধারণা পেয়েছি যে, কিভাবে মোবাইল ও কম্পিউটার আমাদের চোখের ক্ষতি করছে এবং সেই ক্ষতি থেকে কিভাবে আমরা মুক্তি পেতে পারি। তাহলে আশা করি এখন থেকে আপনারাও চেষ্টা করবেন মোবাইল ও কম্পিউটারের এসব ক্ষতি এড়াতে। আর কিভাবে এসব ক্ষতি এড়াবেন, তার উপায়ও কিন্তু এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত ক্ষতিকারক দিকগুলো মাথায় রেখে আজ থেকেই সচেতন হোন। আর বলে রাখা ভালো যে, BDtoppost সাইটে যে যে উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো কিন্তু স্থায়ী কিংবা ১০০% কার্যকারী উপায় না। সুতরাং, সে দিকে নজর রেখে অবশ্যই আপনি একজন চক্ষু অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

মোবাইল ও কম্পিউার ব্যবহারের অপকারিতা সম্পর্কে আরো জানতে

Sadia Afroz Niloy

Hey! I am Sadia Afroz Niloy! A student and passionate writer. I love to write blog and connect people Realtime. Send business proposal at [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button