ঘাড়ে ব্যথা হলে করণীয় | ঘাড় ব্যথার ব্যায়াম
হঠাৎ করেই ঘাড় ব্যথা !এমতোবস্থায় ঘাড়ে ব্যথা হলে করণীয় কী? অথবা ঘাড়ের রগে টান লাগলে করণীয় কী? আপনার মনে যদি এসব প্রশ্ন জাগে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। ( কিডনি ভালো রাখার উপায়গুলো জানুন এবং হার্টের ব্লক কিভাবে দূর করবেন, সে সম্পর্কে জানুন )
শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো মাথা। আর মাথার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক একাই শরীরের সব অংশের কার্যক্রম করতে পারে না। তবে প্লান করতে পারে। মস্তিষ্ক শরীরের আলাদা আলাদা অংশকে সংকেত প্রেরণ করে। সেই সংকেতে সাড়া দিয়ে শরীরের অন্য অংশুগলো কার্য সম্পাদন করে। কিন্তু মস্তিষ্ক কীভাবে এসব সংকেত শরীরের অন্য অংশতে প্রেরণ করে। তার মাধ্যমটা কী? আমাদের দেহের পেছনে আছে মেরুদন্ড। আর মেরুদন্ডের ভিতরে সংরক্ষিত আছে স্নায়ুরজ্জু। আর মস্তষ্ক থেকে প্রেরিত সকল তথ্য প্রেরণ করে এই স্নায়ুরজ্জুর মাধ্যমে। স্নায়ুরজ্জু হলো মস্তিষ্ক থেকে তথ্য প্রেরণের উত্তম মাধ্যম। ( নাকের পলিপাস খুব সজেই দূর করুন )
ঘাড়ে গঠিত মাংসপেশি, হাড়, রক্তনালি ইত্যাদি দ্ধারা। ঘাড়ের মাংসপেশি এবং হাড়ের প্রতি যত্নশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পরোক্ষভাবে আমাদের পুরো শরীরের সু-স্বাস্থ্যের বিষয়টি কিন্তু ঘাড়ের উপরেই নির্ভর করে।
ঘাড় ব্যথার নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণ আছে। এরপরও আরো অনেক কারণ সংশ্লিষ্ট আছে, যেগুলোর কারণেও ঘাড় ব্যথা হতে পারে। তবে ঘাড় ব্যথার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা যায়। সেগুলো হলো-
- ঘাড়ে ব্যথা ফেলে।
- বাঁকা হয়ে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকলে।
- বসার ভঙ্গিতে কোনো রকম ক্রটি থাকলে এবং তা দীর্ঘদিন।
- কাজে করতে গিয়ে ঘাড়ে ব্যথা ফেলে।
- বার বার ঘাড় মটকানোর কারণে।
- ঘাড়ে বা মাথায় কেউ আঘাত করলে।
- ঘাড়ে কেউ টান মারলে।
- প্রেসার কন্ট্রোলে না থাকলে।
উপরোক্ত এই সাতটি কারণ ছাড়াও আরো্ আছে অনেক কারণ। যে কারণে ঘাড়ে তীব্র ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ঘাড় ব্যথার কারণ কী?
ঘাড় ব্যথার নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণ আছে। এরপরও আরো অনেক কারণ সংশ্লিষ্ট আছে, যেগুলোর কারণেও ঘাড় ব্যথা হতে পারে। তবে ঘাড় ব্যথার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা যায়। সেগুলো হলো-
- ঘাড়ে ব্যথা ফেলে।
- বাঁকা হয়ে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকলে।
- বসার ভঙ্গিতে কোনো রকম ক্রটি থাকলে এবং তা দীর্ঘদিন।
- কাজে করতে গিয়ে ঘাড়ে ব্যথা ফেলে।
- বার বার ঘাড় মটকানোর কারণে।
- ঘাড়ে বা মাথায় কেউ আঘাত করলে।
- ঘাড়ে কেউ টান মারলে।
- প্রেসার কন্ট্রোলে না থাকলে।
উপরোক্ত এই সাতটি কারণ ছাড়াও আরো্ আছে অনেক কারণ। যে কারণে ঘাড়ে তীব্র ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ঘাড়ে ব্যথার লক্ষণ সমূহ
সাধারণত আমাদের যখন ঘাড়ে ব্যথা অনুভব হয়, তখনই আমরা বুঝে যাই যে আমাদের ঘাড়ে কিছু একটা ঘটছে। তবে আরো অনেকগুলো লক্ষণ আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা বুঝতে সক্ষম হবো যে আমাদের ঘাড় ব্যথা । অনেকগুলো লক্ষণ থাকতে পাড়ে। তার মধ্যে থেকে কিছু ঘাড়ে ব্যথার লক্ষণ সমুহ হলো-
- ঘাড় ঘুরালে প্রথমিকভাবে কিছুটা ব্যথা ব্যথা অনুভব করা।
- দাঁড়ানো অবস্থায় হাঁটলে কিংবা কোনো রকম কাজ করলেই ব্যথা অনুভব এবং কোনো ক্ষেত্রে ব্যথা বেড়ে যায়।
- ঘাড়ের মুভমেন্ট পরিবর্তনে ব্যথা হওয়া।
- মনে হয় ঘাড় জমে আছে বা ধরে আছে।
- হাতের বাহু, হাত, আঙ্গুল,, অসার হতে থাকা বা দূর্বল হতে থাকে।
- মাঝে মাঝে হাত বা বহু অবশ অবশ অনুভব করা।
- ঘাড় বা মাথা নিচু করলে ঘাড়ের রগে টান খাওয়ার অনুভব করা ইত্যাদি।
উপরে উল্লেখ করা হলো মাত্র কয়েকটি ঘাড় ব্যথার লক্ষণ। এছাড়াও আছে আরো অনেকগুলো ঘাড় ব্যথার লক্ষণ সহ নমুনা। উক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে একাধিক বিষয় যদি আপনার মধ্যে ঘটে থাকে তাহলে ধরে নিবেন আপনার ঘাড় ব্যথা তৈরি হয়েছে।
ঘাড়ে ব্যথা হলে আমাদের করণীয় কী?
যেহেতু ঘাড় ব্যথা একটি যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা এবং বিরক্তকর একটি ব্যথা, তাই এর থেকে রেহাই পেতে আমাদের স্বল্প কিছু নিয়ম মানলেই খুব সহজেই রক্ষা পেতে পারি। এই ক্ষেত্রে ঘাড় ব্যথার কিছু করণীয় আছে। আজকের পর্বে এই ঘাড় ব্যথার এই করণীয়গুলোই ব্যাখ্যা করবো।
যেহেতেু এখন আমরা জানি কেন ঘাড় ব্যথা হয়, সেহেতু ঘাড় ব্যথা হলো এখন আমাদের কী করতে হবে, তা এখন জানতে হবে। সুতরাং ঘাড় ব্যথা হলে আমাদের করণীয় হলো-
- ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে।
- স্পন্ডিলাইটিস এর ব্যায়াম।
- প্রেসার কন্ট্রোল রাখতে হবে।
- খাওয়া-দাওয়ায় কিছুটা পরির্বতন আনতে হবে।
- প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে।
- বেশি হলে ঘাড় ব্যথার ডাক্তার দেখাতে হবে।
- ঘাড় ব্যথার ঔষধ খেতে হবে।
ঘাড়ের রগে টান
ঘাড়ের রগে টান বিষটি ঘাড় ব্যথার সাথেই সম্পর্কিত। নানা কারণে ঘাড়ের রগে টান লাগতে পারে। ঘাড়ের রগে টান লাগার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হলো-
- হাঁটাহাঁটির সময় হঠাৎ করে খুব দ্রুত পিছনে তাকানো বা ঘাড় ঘোরানোর কারণে।
- মাত্রাতিরিক্ত ওজন মাথায় নেওয়া।
- ভারী কিছু উপরে উঠাতে গিয়ে সামনে ঝুকে পড়ার কারণে ঘাড়ে টান লাগতে পারে।
- গাড়িতে চড়ার সময় হঠাৎ ব্রেক চাপলে ঘাড়ে রগে টান লাগতে পারে।
- মাথার অনিয়ন্ত্রিত মুভমেন্ট এর কারণে।
উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও আরো অনেক অজানা কারণ রয়েছে, যেগুলো দ্ধারা আমাদের ঘাড়ের রগে টান লাগতে পারে এবং প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হতে পারে।
ঘাড়ের রগে টান লাগলে করণীয়
এতক্ষণ ঘাড়ের রগে টান লাগার কারণগুলো জানলেন। এখন চলুন জানা যাক এর প্রতিকার করার নিয়মগুলো অর্থাৎ ঘাড়ের রগে টান লাগলে করণীয়গুলো-
- রাতে শোবার সময় মাথার নিচে মাধ্যম সাইজের একটি বালিশ ব্যবহার করবেন।
- বালিশের অর্ধেক মাথার নিচে আর অর্ধেক ঘাড়ের নিচে রাখবেন।
- বালিশ বেশি শক্তও হতে পারবে না আবার বেশি নরমও হতে পারবে না।
- ব্যথা কমলে ঘাড়ে বেশি চাপ দেওয়া যাবে না।
- হাঁটার সময় হাঠাৎ খুব দ্রুত পিছনে তাকানো যাবে না।
- মাত্রাতিরিক্ত কোনো কিছু নিচ থেকে উপরে উঠানো যাবে না।
- গাড়ির ব্রেক হঠাৎ ধরা যাবে না।
- প্রয়োজনে ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের শরাপন্ন হতে হবে।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলোই হলো ঘাড়ে রগে টান লাগার পর করণীয়। এই বিষয়গুলো মান্য করার মাধ্যমে ঘাড়ের রগের টান লাগা দূর করা সম্ভব এবং ব্যথ্যও দুর করা সম্ভব ।
ঘাড়ের শিরায় ব্যথা
ঘাড়ের শিরায় ব্যথা আর ঘাড়ের রগের টানের ব্যথা প্রায় একই জিনিস। তবে কিছু কিছু নির্দিষ্ট কারণে ঘাড়ের শিরায় ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো-
- ঘাড়ের মাংসপেশিতে টান লাগা।
- ঘাড়ে অবস্থিত কশেরুকার স্নায়ু কোনো কারণে সংকুচিত হয়ে যাওয়া।
- শিরদাড়ায় ব্যথা পাওয়া ইত্যাদি কারণে ঘাড়ের শিরায় ব্যথা হয়।
উপরোক্ত কারণগুলোর কারণেই ঘাড়ের শিরায় ব্যথা অনুভব হয় বা ব্যথা সৃষ্টি হয়।
ঘাড় ব্যথার ব্যায়াম
ঘাড় একটি অমূল্য সম্পদ। মানব দেহের জন্য ঘাড় সুস্থ্য রাখা অপরিহার্য। আমাদের ঘাড়ে নানা কারণে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। উপরের অনেকগুলো কারণ এবং প্রতিকার দেখানো হয়েছে যে কীভাবে ঘাড়ের ব্যথা হতে রক্ষা পেতে পারি। কিন্তু অনেকগুলো কারণ দেখিয়েছি ঘাড়ের ব্যথার। এবং সাথে দেখিয়েছি এর প্রতিকারের দিকটিও। তবে এখন প্রতিকারের দিকটি বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
ঘাড়ে ব্যথা কমানোর এবং ঘাড় ঠিক রাখার উপায়ের একটি হলো ঘাড়ের ব্যায়াম। নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করলে অবশ্যই ঘাড়ের কন্ডিশান ঠিক থাকবে। ঘাড়ের ব্যায়াম করার কয়েকটি নিয়ম দেওয়া হলো-
- মাঠিতে বা ফ্লোরে সোজা হয়ে বসুন। এরপর ঘাড় ও মাথা দেহ বরাবর সোজা হয়ে বসুন। বসার সময় লম্বা শ্বাস নিয়ে বসুন। এরপর দেহের দুই কাঁদ উঁচু করে রাখুন ১০-১৫ সেকেন্ড। নির্দিষ্ট সময় উঁচু করে রাখার পর কাঁদ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন। এইভাবে দিনে কয়েকবার করতে পারেন। এটি একটি কার্যকারী ঘাড়ের ব্যায়াম। কাঁদ উঁচু করে রাখার সময় শ্বাস নিয়ে রাখুন এবং কাঁদ নিচে নামানোর সময় আবার নিঃশ্বাস ছাড়ুন। এভাবে প্রতিনিয়ত ঘাড়ের ব্যয়াম করুণ।
- মাথা সোজা রাখুন এবং শক্ত করে রাখুন। এবার মাথার সামনের অংশ অর্থাৎ কপালে হাত দিন। এবার মাথা নিচের দিকে ঝুকার চেষ্টা করুন এবং হাত দিয়ে তা বিপরীত দিকে চাপ দিন। একই ভাবে মাথার ডান দিকে এবং বাম দিকে ঘাড়ের এই ব্যায়াম টি করুণ। ঘাড়ের এই ব্যায়ামটি প্রতিদিন কয়েকবার করুণ এবং প্রতিনিয়ত করতে থাকুন।
- অনেক সময় দেখা যায় যে, ঘাড়ের রগ টানার সাথে সাথে ঘাড়ের ব্যথাও অনুভব হয় এবং ঘাড় নাড়াতে ও অসুবিধা হয়। সেক্ষেত্রে শিথিলায়ন ব্যায়াম করতে পারেন। ঘাড়ের শিথিলায়ন ব্যায়াম শেষে আস্তে আস্তে ঘাড় নাড়তে থাকেন।
- ঘাড় ঘুরাতে চেষ্টা করুন। প্রথমে ঘাড়ে ডান দিকে যতটা সম্ভব ঘুরান এরপর বাম দিকে আস্তে আস্তে ঘুরানোর চেষ্টা করুণ। এবার নিচের দিকে এবং উপরের দিকে ঘাড় ঘুরানোর চেষ্টা করুণ। এভাবে প্রতিনিয়ত করতে থাকুন। যত ঘাড় ঘুরাবেন, ততো ঘাড়ের লক খুলতে থাকবে। এতে করে এক সময় সম্পূর্ণ ঘাড় ঘুরাতে পারবেন। আর এই ব্যায়ামটা হলো ঘাড় ব্যথার ভালো একটি ব্যায়াম।
ঘাড় ব্যথার ঔষধ
এমনিতে ঘাড় ব্যথার ঔষধের নাম উল্লেখ করা ঠিক হবে না। তবে ঘাড়ে যদি প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং উপরোক্ত উল্লেখিত ঘাড়ের ব্যায়াম এবং কৌশলের মাধ্যমেও ব্যথা না কমে তাহলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গিয়ে ঘাড় ব্যথার ঔষধ নিতে পারেন। তবে ঔষধ নেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
ঘাড় ব্যথার ডাক্তার
সাধারণত ঘাড় ব্যথা হলে স্থানীয় ডাক্তারদের সাথে কনসাল্ট করে প্রাথমিক পর্যয়ে ঔষধ নিতে হবে। তবে ব্যথা যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে অবশ্যই ঘাড় বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তারের শরাপন্ন হতে হবে। তবে কোনো রকম অনবিজ্ঞ ডাক্তারের নিকট কোনো ভাবেই যাওয়া যাবে না। খোঁজ-খবর নিয়ে ঘাড় ব্যথার ডাক্তার এর কাছে যেতে হবে। ডাক্তারের দেখানো নিয়মে ঔষধ এবং জীবন গতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।