Health

কিডনি ভালো রাখার উপায় | ১৫টি উপায় জেনে নিন

কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি সুস্থ্য রাখতে কিডনি ভালো রাখার উপায় গুলো অবশ্যই জানতে হবে। মানব শরীরে অন্যসব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ন্যায় কিডনি হলো অন্যতম। আমাদের শরীরে ২টি করে কিডনি রয়েছে। যেগুলো প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে। কিডনি নিয়ে অনেকের অনেক রকমের প্রশ্ন রয়েছে। ( ঘাড়ে ব্যথা হলে করণীয় কি এবং হার্ট ব্লক কিভাবে দূর করবেন, সে সম্পর্কে জানুন )

সুস্থ্য-সবল দেহ রাখতে কিডনি সুস্থ্য থাকা অন্যতম একটি শর্ত। কীভাবে কিডনি ২টি কে সুস্থ্য রাখা যায়? কয়েকটি উপায় মেনে চলার মাধ্যমে কিডনি এফেক্ট হওয়ার পূর্বেই কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারবো। কিডনি সুস্থ্য রাখার উপায় জানার আগে চলুন জানা যাক কী কী কারণে আমাদের শরীরে অবস্থিত কিডনি ২টি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বা বিকল হয়ে যায়। ( সুস্থ্য থাকতে নিয়মিত কলা খাওয়ার শুরু করুণ এবং একই সাথে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান )

কিডনি বিকল বা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণগুলো হলো

কিডনি বিকল বা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণগুলো

কিডনি বিকল হওয়ার কারণ শুধু একটি বা দুটি নয়। অনেকগুলো কারণ রয়েছে কিডনি বিকল হওয়ার। তার মধ্যে কয়েকটি হলো-

  • অতিরিক্ত আমিষ খাওয়া
  • অতিরিক্ত দৈহিক সুস্থলতা বৃদ্ধি পাওয়া
  • খাদ্যে বেশি শর্করা প্রোটিন থাকা
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • ধূমপান করা
  • ডায়াবেটিস
  • বংশগতভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত
  • প্রেসার বেড়ে থাকা
  • পেইনকিলার খাওয়া ইত্যাদি কারণে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে।

উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হিবেবে। যেমন কিডনির নিজেরই নিজস্ব কিছু রোগ বা অসুখ রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমেও হতে পারে। রোগগুলো হলো গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস, পলিসিষ্টিক ইত্যাদি কিডনির অসুখ। এগুলোর কারণেও আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে।

এবার চলুন জানা যাক কিডনি ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। কিভাবে আমরা আমাদের কিডনি দুইটিকে ভালো এবং সুস্থ্য রাখতে পারি।

কিডনি ভালো রাখার ১০টি উপায়

কিডনি ভালো রাখার ১০টি উপায়

শত উপায় রয়েছে কিডনি ভালো রাখার। কিন্তু আমরা কোন কোন উপায়গুলো মেনে চলতে পারবো। সবগুলো এক সাথে মেনে চলা টাপ ব্যাপার। সুতরাং গবেষক এবং চিকিৎসকরা কমন কয়েকটি জিনিস উল্লেখ বা বাঁচাই করে দিয়েছেন, যেগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আমরা আমাদের কিডনি দুইটিকে রক্ষা বা বিকল হওয়ার রোগ থেকে বাঁচাতে পারবো। সেই উপায়গুলো হলো-

  • পর্যাপ্ত পানি পান করা
  • আমিষ জাতীয় খাবার বেশি না খাওয়া বা এড়িয়ে চলা
  • শর্করা বা প্রোটিন জাতীয় খাবার কম খাওয়া
  • কোনো রকম পেইন কিলার ঔষধ সেবন না করা।
  • বেশি ঔষধ সেবন থেকে দূরে থাকা
  • পানি শূণ্যতায় না ভোগা
  • বেশি বেশি শাক-সবজি খাওয়া
  • ধূমপান এড়িয়ে চলা
  • লবণ খাওয়া পরিহার করা
  • দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • কোমল জাতীয় পানি বা বেশি ঠান্ডা জাতীয় পদার্থ থেকে দূরে থাকা
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • শরীর চর্চা করুণ
  • বছরে অন্তত একবার চেকআপ করান

উপরোক্ত বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা সহ নিম্নে উপস্থাপন করা হলো। এগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আশা করা যায় আমরা আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা কিডনি ২টিকে সুস্থ্য রাখতে পারবো।

পর্যাপ্ত পানি পান করা

কিডনি সুস্থ্য রাখতে দৈনিক অন্তত ৭-৯ গ্লাস পানি পান করতে হবে। তবে যদি তাপমাত্রা বা আবহাওয়া বেশি গরম থাকে, সেক্ষেত্রে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে। কেননা ঘামে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার একটি সুফল হলো কিডনিতে কখনো পাথর হয় না এবং এর কার্যক্রম সচল থাকে।

শর্করা, প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা

আমরা যখন মাংস জাতীয় প্রাণীজ আমিষ এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করি, তখন সেগুলো আমাদের কিডনিতে প্রচুর প্রেসার ক্রিয়েট করে থাকে। ফলাফলসরূপ আমাদের কিডনিতে থাকা পাতলা এবং দুর্বল কোষগুলো মরে যায় বা ক্ষতি হয়। তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা যতদূর সম্ভব প্রাণীজ আমিষ-প্রোটিন এড়িয়ে চলবো এবং ডাল -মাছ -মাংস খাওয়ার চেষ্টা করবো।

ঔষধ সেবন থেকে দূরে থাকুন

প্রতিনিয়ত আমরা কোনো না কোনোভাবে ঔষধ সেবন করে চলেছি। প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষ উভয়ভাবেই এসব ঔষধ আমাদের কিডনির জন্য ক্ষতিকর। সব ঔষধের রয়েছে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এছাড়া পেইন বা ব্যথার জন্য আমরা অনেকে বিভিন্ন রকম পেইন কিলার খেয়ে থাকি। এসব ঔষধ সরাসরি আমাদের কিডনিতে প্রভাব ফেলে এবং ফলাফলসরূপ কিডনি বিকল হয়ে যায়। তাই যথেষ্ট পরিমাণ চেষ্টা করতে হবে ঔষধ না খাওয়ার।

পানি শূণ্যতা থেকে বাঁচা

কোনো ভাবেই পানি কম খাওয়া কিংবা ডায়রিয়া বা কলেরা হওয়ার পর পানি শূণ্যতায় থাকা যাবে না। পানি শূণ্যতায় আছে কি-না তা বুঝার সবচেয়ে বেস্ট পদ্ধতি হলো প্রস্রাব গাড় হওয়া এবং রং পরিবর্তন হওয়া। পানি শূণ্যতা দূর করতে আমরা ডাবের পানি বা খাবার সেলাইন গ্রহণ করতে পারি।

বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়া

আমরা অনেকে মাসে কিংবা সপ্তাহে একবারও শাকসবজি খাই না।তাদের জন্য বড় দুসংবাদ হলো তাদের কিডনি ইতিমধ্যে অনেক দূর্বল হয়ে গেছে। কিডনিকে সুস্থ্য রাখতে সবুজ শাকসবজির বিকল্প কোনো কিছুই নেই। তাই কিডনি বা বৃক্ক সুস্থ্য রাখতে প্রতিদিনের খাবারে স্বল্প পরিমাণ হলেও শাকসবজি রাখতে হবে।

ধূমপান এড়িয়ে চলা

যারা চেইন স্মোকার তাদের কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯০% এর চেয়েও বেশি। কেননা অতিরিক্ত ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতি তেমনি কিডনির জন্যও । ধূমপান করলে কিডনির রক্ত প্রবাহে তা বাঁধা দেয়। তখন কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। সুতরাং ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।

লবণ খাওয়া পরিহার করা

অতিরিক্ত লবণ কিডনিতে ক্ষয় সৃষ্টি করে। মানুষের দেহে দৈনিক ১ চা চামচ লবণের প্রয়োজন পড়ে। এর বেশি খেলে কিডনিতে লবণের অতিরিক্ত প্রভাব পড়ে। তখন কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। সুতরাং সতর্কভাবে লবণ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণ

যতটুকু সম্ভব ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। স্থুলতা ডায়াবেটিসের দিকে ধাবিত করে এবং যা কিডনিতে রোগ সৃষ্টিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

ডায়াবেটিস নিয়মিত মাপুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং প্রতিনিয়ত রাখার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত সুগার জাতীয় খাদ্য পরিহার করুন। রক্তে সুগারের পরিমাণ কেমন আছে তা সপ্তাহে সপ্তাহে মেপে ‍দেখুন।

কোমল পানি বর্জন করুন

অনুষ্ঠান কিংবা এমনিতে অনেকে কোমল জাতীয় বিভিন্ন রকম এনার্জি ড্রিংক পান করে থাকেন। এসব এনার্জি ড্রিংক কিডনির জন্য খুবই খারাপ। তাই যতদূর পারা যায়, এসব কোমল জাতীয় পানীয় থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রেণে রাখা

কিডনি ভালো রাখতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্তু ভালো একটি পদক্ষেপ। কোনো কারণে যদি রক্ত চাপ ৮০-১৪০ এর উপরে উঠে যায়, তাহলে কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেড়ে যায়। তাই প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে রক্তচাপ ৮০-১৩০ এর মধ্যে রাখতে। এতে করে কিডনি বা বৃক্ক সুস্থ্য থাকে।

শরীরচার্চা অব্যহত রাখুন or কিডনি ভালো রাখার ব্যায়াম

কিডনি এবং আমাদের পুরো শরীর ভালো রাখতে শরীরচর্চার বিকল্প কোনো কিছুই নেই। নিয়মিত শরীর চর্চা করলে কিডনিতে রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসে। ইন্টারনেটে সার্চ দিলে অনেক প্রকার কিডনি ভালো রাখার ব্যায়াম পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে কিছু আপাতত শিখে নিন।

কিডনি পরীক্ষা করুণ

কিডনি পরীক্ষা করুণ

যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থুলতা রয়েছে তারা প্রতিনিয়ত কিডনি চেকআপ করালে ভালো ফলাফল পেতে পারে। এসব রোগীরা যদি কিডনিতে অসুবিধা অনুভব করে তাহলে সাথে সাথেই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে কিডনির পরীক্ষা রকতে হবে। না হয় বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিডনিতে যখন মাত্রাতিরিক্ত সমস্যা হয়ে যায়, তখনেই কেবল তা প্রকাশ পায়। কিন্তু যদি নিয়মিত বা বছরে অন্তত একবারও পরীক্ষা করা হয় কিডনির, তাহলে সম্পূর্ণ বিকল হওয়ার আগেই কিডনির চিকিৎসা করে কিডনিকে ভালো করতে পারা যায়। সুতরাং বছরে ২ বার না হলেও অন্তত একবার হলেও কিডনি পরীক্ষা করতে হবে।

উপরোক্ত বিষয়গুলো মান্য করার মাধ্যমেও কিডনি ভালো রাখা যায়। তবে এছাড়াও আরো অনেক উপায় রয়েছে, যেগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে একজন তার কিডনি ভালো রাখতে পারে। সুতরাং উপরোক্ত কিডনি ভালো রাখার উপায় গুলো মান্য করে আমরা আমাদের কিডনি ২টিকে ভালো রাখতে পারি।

কিডনি ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে আরো জানতে

https://youtu.be/kf86LHa_ms4

Sadia Afroz Niloy

Hey! I am Sadia Afroz Niloy! A student and passionate writer. I love to write blog and connect people Realtime. Send business proposal at [email protected]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button